প্রশ্ন- মাদ্রাসার শিক্ষক আলিম সাহেব কুরআনের অধ্যায় আলোচনা শেষ করে হাদিস বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন। ক্লাসের ছাত্র নাফিস বললো, স্যার হাদিসের প্রয়োজন কী? কুরআনে তো সবকিছুর আলোচনা আছে। আলিম সাহেব বললেন, কুরআনের মতো হাদিসও আল্লাহর ওহি। হাদিস ছাড়া কুরআন বোঝা সম্ভব নয় এবং নিয়ম মত ইবাদত করাও সম্ভব নয়।
ক. ওহি কাকে বলে?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত বক্তব্যের আলোকে কুরআন ও হাদিসের সম্পর্ক এবং পার্থক্য বর্ণনা করো।
ঘ. আলিম সাহেবের বক্তব্যের সাথে কি তুমি একমত? পাঠ্য বইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
ক) আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক তার নবি-রাসুলদেরকে ফেরেশতার মাধ্যমে স্বপ্নযোগে কিংবা ইলহামের মাধ্যমে কোনো বিষয় জানিয়ে দেওয়াকে ওহি বলে।
গ) কুরআন ও হাদিসের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি অপরটির পরিপূরক। হাদিস আল কুরআনের ব্যাখ্যাস্বরূপ। পবিত্র কুরআনের বিধানাবলির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে হাদিস গ্রন্থে। তাই কেউ যদি নিজেকে গোমরাহির পথ থেকে ফিরিয়ে এনে সঠিক পথে পরিচালনা করতে চায় তাহলে তাকে কুরআনের নির্দেশনা জানা ও মানার পাশাপাশি হাদিসের মাধ্যমে উদ্দীপকে আলিম সাহেবের বক্তব্যে বিষয়টির ব্যতয় ঘটেছে। উদ্দীপকে উল্লেখিত আলিম সাহেবের বক্তব্যে কুরআন ও হাদিসের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। আলিম সাহেবের ভাষ্য মতে, কুরআনের মতো হাদিসও আল্লাহর ওহি। হাদিস ছাড়া কুরআন বোঝা এবং নিয়মমত ইবাদতও করা সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষেই কুরআন ও হাদিসের সম্পর্ক হলো একটি অপরটির পরিপূরক। কুরআনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুধাবন করতে হাদিসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাইতো হাদিসকে আল কুরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থ বলা হয়। আবার মূল বিধানকে বুঝতে শুধু হাদিসের উপর নির্ভরশীল হলে চলবে না; বরং আল কুরআনে ঐ বিধান সম্পর্কে কি বলা হয়েছে তা ভালোভাবে অনুধাবনের চেষ্টায় হাদিসকে গ্রহণ করতে হবে। সুতরাং কুরআন ও হাদিসের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি অপরটির পরিপূরক।
ঘ) হ্যাঁ, কুরআন ও হাদিসের সম্পর্কের ব্যাপারে আলিম সাহেবের বক্তব্যটি যথার্থ হওয়ায় আমি তার বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করছি। কুরআনের সব বিষয়ের নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা হাদিসে বিদ্যমান থাকায় কুরআন ও হাদিসের মধ্যে সুস্পষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান। আবর আল কুরআনের মত হাদিসও ওহির অন্তর্ভুক্ত। হাদিসকে বলা হয় ওহিয়ে গায়রে মাতল। উদ্দীপকে আলিম সাহেবের বক্তব্যে এ বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।উদ্দীপকের আলিম সাহেব বললেন, কুরআনের মতো হাদিসও আল্লাহর ওহি। হাদিস ছাড়া কুরআন বোঝা এবং নিয়মমত ইবাদত করা সম্ভব নয়। তার এ বক্তব্যটি যথার্থ। প্রকৃতপক্ষেই হাদিস ব্যতিত কুরআন বোঝা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। কারণ, কুরআন আল্লাহ যে জীবনবিধান ও আদর্শ উপস্থাপন করেছেন, সাধারণ মানুষের পক্ষে সবসময় ও তা সহজবোধ্য নয়। তাই এ থেকে উপকৃত হওয়ার তাদের জন্য কষ্টকর। হাদিসে কুরআনের বক্তব্যসমূহ সর্বসাধারণের উপযোগী করে পরিবেশন করা হয়েছে। এজন্যই হাদিসকে কুরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থ বলা হয়। আরএই যৌক্তিকতাই আলিম সাহেবের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে।পরিশেষে বলা যায় যে, আলিম সাহেবের বক্তব্যটি কুরআন ও হাদিসের সম্পর্কের ব্যাপারে যৌক্তিক হওয়ায় তার উক্ত বক্তব্যটির সাথে আমি একমমত পোষণ করছি।