মহাজাগতিক কিউরেটর গল্পটি একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি হলেও এতে দেশকালের প্রভাবপুষ্ট মানবকল্যাণকর্মী লেখকের জীবনদৃষ্টির প্রতিফলন ঘটেছে। অনন্ত মহাজগৎ থেকে আগত মহাজাগতিক কাউন্সিলের দুজন কিউরেটরের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর নমুনা সংগ্রহে সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ পৃথিবীতে আগমনের তথ্য দিয়ে গল্পটির সূচনা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে দুজন কিউরেটরের সংলাপ বিনিময়ের মধ্য দিয়ে গল্পটি নাট্যগুণ লাভ করেছে। এ কল্পকাহিনিতে বুদ্ধিমান ও শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে মানুষ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সুবিবেচনা ও বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে তারা ভারসাম্যপূর্ণ নয়। কারণ তারা অনেক আবিষ্কার ও উদ্ভাবন করলেও সেগুলোর অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে মানুষ এখন স্বেচ্ছা ধ্বংসকারী প্রাণী। বাতাস, পানি, মাটিদূষণ, বৃক্ষনিধন এবং একে অন্যের ওপর নিউক্লিয়ার বোমা ফেলার মাধ্যমে পৃথিবী নামের সুন্দর গ্রহটিকে তারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। দুজন কিউরেটর পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে মানুষের কারণেই হ্রাস ঘটে যাচ্ছে ওজোন স্তরের। মানুষই নির্বিচারে গাছ কেটে ধ্বংস করে চলেছে প্রকৃতির ভারসাম্য। পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে মানুষই নিউক্লিয়ার বোমা ফেলছে একে অন্যের ওপর। এ পরিস্থিতেতেও তারা পৃথিবীর বুদ্ধিমান বলে কথিত।মানবগোষ্ঠী প্রজাতির নির্বুদ্ধিতায় শঙ্কিত হয়ে থাকে। অবশেষে তারা পরিশ্রমী সুশৃঙ্খল সামাজিক প্রাণী পিঁপড়াকেই শনাক্ত করে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রজাতি হিসেবে।ডাইনোসরের যুগ থেকে এখনও বেঁচে থাকা সুবিবেচক ও পরোপকারী প্রাণী পিঁপড়াকে এখন পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী বিবেচনায় সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হবে।